রাদারফোর্ডের পরীক্ষাআর্নেস্ট রাদারফোর্ড ১৯০৯ সালে তাঁর বিখ্যাত আলফা কণা বিক্ষেপণ পরীক্ষা সম্পাদন করেন। আলফা কণা হলো তেজস্ক্রিয় বিকিরণে নির্গত ধনাত্মক আধানযুক্ত কণিকা। রাদারফোর্ডের নির্দেশে তার দুজন সহকর্মী গাইগার ও মার্সডেন এ পরীক্ষাটি করেছিলেন। একটি তেজস্ক্রিয় উৎস থেকে নির্গত আলফা কণা দিয়ে ভারী ধাতুর (যেমন স্বর্ণ) অত্যন্ত পাতলা | পাতকে আঘাত করা হয়েছিল। পরীক্ষায় যে স্বর্ণের পাত ব্যবহার করা হয়েছিল তার পুরুত্ব ছিল 6 x 10-7m। স্বর্ণপাতের অপরদিকে রাখা হয়েছিল একটি চলনশীল জিঙ্ক সালফাইড পর্দা (চিত্র ৯.২)। আলফা কণা যখন এ পর্দায় এসে পড়ত তখন আলোকপ্রভা দেখা যেত। পরীক্ষায় দেখা যায় যে, প্রায় 99% আলফা কণাই স্বর্ণপাত ভেদ করে সোজাসুজি চলে যায় এবং ZnS পর্দাকে আলোকিত করে। থাকে বেঁকে যায়। মাত্র কয়েকটি আলফা কণা তাদের পথ থেকে বেঁকে যায়। কমসংখ্যক আলফা কণা (প্রায় 20,000 এর মধ্যে 1 টি) সোজা বিপরীত দিকে ফিরে আসে। |
---|
পরমাণুর অধিকাংশ স্থানই ফাঁকা। যেহেতু আলফা কণার তুলনায় ইলেকট্রনের ভর অতি নগণ্য, সেহেতু এই ফাঁকা স্থানে ইলেকট্রন থাকতে পারে। তবে এরা আলফা কণার গতিপথের কোনো পরিবর্তন ঘটাতে পারে না ।
যেহেতু খুব কম সংখ্যক আলফা কণা বিপরীত দিকে ফিরে আসে, তাই বলা যায়, আলফা কণা সোজাসুজি তার চেয়ে ভারী কোনো কিছুর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় বা তা দ্বারা বিকর্ষিত হয়। অর্থাৎ পরমাণুর কেন্দ্রে পরমাণুর সমস্ত ভর অতি ক্ষুদ্র স্থান দখল করে থাকে।
যেহেতু আলফা কণাসমূহ ধনাত্মক আধানযুক্ত এবং এক্ষেত্রে বিকর্ষিত হয় সেহেতু পরমাণুর কেন্দ্রও ধনাত্মক আধানযুক্ত হবে । তিনি ভারী ও ধনাত্মক আধানযুক্ত পরমাণুর এ কেন্দ্রকে নিউক্লিয়াস নামে অভিহিত করেন।
নিউক্লিয়াসের আয়তন সমগ্র পরমাণুর আয়তনের তুলনায় খুবই কম। হাইড্রোজেন পরমাণুর ব্যাস যেখানে 10-10m, সেখানে নিউক্লিয়াসের ব্যাস 10-15 m থেকে 10-14m, অর্থাৎ পরমাণু নিউক্লিয়াসের তুলনায় দশ হাজার থেকে এক লাখ গুণ বড়।
আলফা কণিকা বিক্ষেপণ পরীক্ষার পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে ১৯১১ সালে রাদারফোর্ড পরমাণুর গঠন সম্পর্কে একটি মডেল প্রদান করেন।
আরও দেখুন...